May 18, 2024, 5:23 am

স্ত্রীকে হত্যা করে ১৭ বছর সাংবাদিকতা করেছেন তিনি

স্ত্রীকে হত্যা করে ১৭ বছর সাংবাদিকতা করেছেন তিনি

Spread the love

স্ত্রীকে হত্যার পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে ঢাকার আশুলিয়ায় চলে যান আশরাফ হোসেন (৪৭)। প্রায় ১৭ বছর গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন তিনি। করেছেন সাংবাদিকতা। সাংবাদিকদের নেতাও ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তার। ধরা পড়লেন র‍্যাবের হাতে। গতকাল বৃহস্পতিবার সাভার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, স্ত্রী সানজিদা খানম হত্যা মামলায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আশরাফকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত, কিন্তু তিনি পলাতক ছিলেন। তাকে খুঁজে বের করার জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে র‍্যাবকে অনুরোধ জানায় সানজিদার পরিবার। এই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আশরাফকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, আশরাফ একসময় একটি বেসরকারি সিমেন্টে কোম্পানির কারখানায় কাজ করতেন। স্ত্রী সানজিদা ও ১৫ মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে তিনি সিমেন্ট কোম্পানির কোয়ার্টারে থাকতেন। ২০০৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে কোয়ার্টারের বাসা থেকে সানজিদার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সানজিদা আত্মহত্যা করেছেন—এমন ধারণা থেকে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে আশরাফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১২ দিন পর তাকে জামিনে মুক্ত করেন তার শ্বশুর। জামিনে মুক্তি পেয়ে সন্তানকে নিয়ে তিনি আত্মগোপন করেন। তিন মাস পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সানজিদাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে আর খুঁজে বের করতে পারেনি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানান, আত্মগোপনের এক বছর পর ২০০৬ সালে আশরাফ আশুলিয়ায় সাপ্তাহিক মহানগর বার্তা নামের একটি পত্রিকায় যোগ দেন। পরিচয় গোপন করে একই বছর তিনি আশুলিয়া এলাকায় বিয়ে করেন। ২০০৯ সালে তিনি আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য হন। ২০১৩-১৪ মেয়াদে তিনি আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। সর্বশেষ তিনি সাপ্তাহিক স্বদেশ নামের একটি পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

আশরাফকে খুঁজে বের করা সহজ ছিল না জানিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, শুরুতে তার (আশরাফ) একটি মুঠোফোন নম্বর সচল অবস্থায় পাওয়া যায়। নম্বরটির অবস্থান ছিল বরিশালে। সেখানে গিয়ে জানা যায়, এই নম্বরটি এখন আর আশরাফ ব্যবহার করেন না। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানি সেটি ওই ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে সোনারগাঁওয়ের যে এলাকায় আশরাফ বসবাস করতেন, সেখানে গিয়ে তার ছবি সংগ্রহ করা হয়। আশরাফের ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করতে পারবেন, এমন ব্যক্তি খুঁজে বের করা হয়। আশরাফ নাম লিখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সার্চ করে বিভিন্ন আইডি পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি আইডি ও একটি পেজে তার ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে এ-সংক্রান্ত আরও তথ্য সংগ্রহের পর নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে আশরাফকে গ্রেপ্তার করা হয়।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category